ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া জমজম হাসপাতালে দু’পক্ষের ডাকা সভা পন্ড

স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :

প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে ৭ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) কোন পক্ষই চকরিয়া জমজম হাসপাতালে সাধারণ সভা করতে পারেনি। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমজম হাসপাতাল (প্রাঃ) লি: বিবাদমান দুই পক্ষকেই পরিস্কার জানিয়ে দেয়া হয় যে, ‘সভা করতে চাইলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রশাসন শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নিবে। তাই প্রশাসনের এমন কঠোর অবস্থানের কারণে পন্ড হয়ে গেছে দুই গ্রুপের আহুত সাধারণ সভা। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডার ও সেবা নিতে আসা রোগীরা।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, চকরিয়াস্থ জমজম হাসপাতাল (প্রা:) লিমিটেডের বিবাদমান দুইটি পক্ষ আজ শুক্রবার হাসপাতাল ভবনে একই সময়ে সাধারণ সভা আহবান করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। তৈরী হয় সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কয়েকজন একটি চিকিৎসা সেবা দানকারি প্রতিষ্ঠানে শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জরুরী হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখিত আবেদনও করে। এনিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চকরিয়া নিউজসহ বিভিন্ন গন মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে প্রশাসন কোন পক্ষকেই সভা করতে দেয়নি।

হাসপাতালের একাধিক সুত্র জানায়, নানা অনিয়ম, ডাক্তার, নার্স ও সেবা প্রত্যাশি রোগিদের সাথে বার বার দুর্ব্যবহার করার কারণে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট পরিচালনা পর্ষদ সর্বসম্মতভাবে গোলাম কবিরকে অব্যাহতি দিয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসক নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. এসএম শওকত ওসমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্বাচিত করেন কিন্তু গোলাম কবির গায়ের জোরে ডা.এসএম শওকত ওসমানকে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে আদালতে মামলা করেন।

উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি প্রশমিত করতে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম বিএ (অনার্স) এমএ জমজমের বিশেষ সাধারণ সভায় বিগত ২৬/১১/২০১৬ গোলাম কবিরকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক করে উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা করে দেন। গোলাম কবির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কয়েক মাস দায়িত্ব পালন করে ভেতরে ভেতরে হাইকোর্টে মামলা (নং ১৬৯/২০১৬) চালাতে থাকেন। বিগত ০৯/০৫/২০১৭ হাইকোর্টে দোতরফা শুনানী শেষে মামলাটি খারিজ হয়ে গেলে তিনি সুপ্রীম কোর্টে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল (নং ২৫২৬/২০১৭) দায়ের করেন। বিগত ১২/০২/২০১৮ আপীলেট ডিভিশনের চারজন বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে সেই লিভ টু আপীল শুনানী শেষে খারিজ করে দেন। সর্বোচ্চ আদালতে মামলায় হেরে গিয়েও গোলাম কবির জোর করে জমজমের চেয়ার ধরে রাখেন।

সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পর গোলাম কবিরকে একবার বের করেও দেয়া হয় কিন্তু তিনি আবার দলবল নিয়ে চেয়ার দখল করেন।
জমজমের সাবেক পরিচালক ও সাংবাদিক নেতা জিএএম আশেক উল্লাহ বলেন, সুপ্রীম কোর্টের ফায়সালার পর গোলাম কবিরের বাড়াবাড়ি করা মোটেও উচিত হচ্ছে না। তার উচিত শান্তিপুর্ণভাবে ডা.এসএম শওকত ওসমানকে সম্মান জানিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা কিন্তু তিনি তা না করে বাড়াবাড়ির কারণে হাসপাতাল আজ ধ্বংসের পথে বসেছে, লক্ষ লক্ষ টাকা লোপাট হচ্ছে এবং হাসপাতালে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না।

এবিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান জানান, জমজম হাসপাতালের বিবাদমান দুইটি গ্রুপকেই বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দেয়া হয়েছে সভা না করতে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকেও শুক্রবার সারাদিন সতর্ক নজরদারি ছিল। তাই কোন পক্ষই সভা করতে পারেনি।

পাঠকের মতামত: